যেভাবে বুঝবেন আপনি অমিক্রনে আক্রান্ত

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার নতুন ধরন অমিক্রন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশে হাসপাতালে ভর্তির হারও বেড়েই চলেছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের ১২৮টি দেশে অমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশে এই পর্যন্ত অন্তত ২৪ জন অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন বলে সরকারি সূত্রগুলো জানাচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও এই ধরনের সংক্রমণ বাড়ছে। খবর বিবসির। এই ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে সবার আগে জানতে হবে অমিক্রন সম্পর্কে বিস্তারিত। অমিক্রনে আক্রান্ত হলে কি কি সমস্যা হতে পারে? কি ধরণের লক্ষণ রয়েছে ইত্যাদি। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

অমিক্রনের লক্ষণগুলো কী কী?

অনেক মানুষের কাছে অমিক্রন সাধারণ ঠাণ্ডার মতো মনে হবে। অনেকে বলেছেন, অমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার পর তাদের গলা শুকিয়ে যাওয়া, সর্দি লাগা, শরীরের জয়েন্টে ব্যথা বা মাথা ব্যথা হয়েছে। এর আগের করোনাভাইরাসের ধরনগুলোয় আক্রান্ত হলে স্বাদ বা গন্ধ চলে যাওয়ার ঘটনা ঘটতো। এছাড়া কাশি এবং উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর হতো। এখনো করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে এই তিনটি প্রধান লক্ষণ। চিকিৎসকরা বলছেন, অমিক্রনে আক্রান্ত হলে অনেক সময় হালকা ঠাণ্ডা বা সাধারণ অসুস্থতার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। এছাড়া আরো যেসব উপসর্গ দেখা দিতে পারে: বুকের ওপরের অংশে ব্যথা, মাথা ব্যথা, জ্বর, ক্লান্ত লাগা, শরীরে ব্যথা, গলা শুকিয়ে যাওয়ার অনুভূতি। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহামারি বিশেষজ্ঞ ড. আব্দি মাহামুদ বলেছেন, ”অমিক্রন যে অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে কম ক্ষতিকর, সেটি বলার মতো যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। সুতরাং মুল বার্তা হলো, আপনি যদি টিকা নিয়ে থাকেন, তাহলেই আপনি নিরাপদ।”

অমিক্রন শনাক্ত করতে কী ধরনের পরীক্ষা করা হয়?

সন্দেহভাজন রোগীর অমিক্রন হয়েছে কিনা, সেটা জানতে পুরো জেনেটিক বিশ্লেষণ প্রয়োজন হয়। করোনাভাইরাসের পিসিআর মেশিনে মুখের যে লালা পরীক্ষা করা হয়, সে লালায় ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেলে পরে সেটা পাঠিয়ে দেয়া হয় জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য। সেজন্য চার থেকে পাঁচদিন সময় লেগে যায়। জেনেটিক তথ্যউপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন, আক্রান্ত ব্যক্তি অমিক্রন নাকি অন্য কোন ধরনে আক্রান্ত হয়েছেন। বাংলাদেশের কয়েকটা প্রতিষ্ঠানে করোনাভাইরাসের বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের ব্যবস্থা থাকলেও অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের পরীক্ষা হচ্ছে শুধুমাত্র সরকারের রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা আইইডিসিআরে।

অমিক্রনের সঙ্গে অন্য ধরনগুলোর পার্থক্য কী?

সব ধরনের ভাইরাস দ্রুত অভিযোজিত হয় বা নিজেকে বিস্তার করে। তার ফলেই করোনাভাইরাসের এসব নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টের জন্ম হয়। অনেক ভ্যারিয়েন্ট ভাইরাসকে আরও বেশি ক্ষতিকর করে তুলতে পারে। আবার অনেকগুলো শুধুমাত্র নিজেকে বিস্তার করে বা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বিজ্ঞানীরা একে বর্ণনা করেছেন ‘ভ্যারিয়েন্টও অব কনসার্ন’ বা (ভিওসি) নামে। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংস্থা গবেষণা করে দেখতে পেয়েছে, ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও বুস্টার ডোজ নিলে ৮৮ শতাংশ ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ঠেকানো যায়। সূত্র: বিবিসি বাংলা